পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে এখন বন্যা পরিস্থিতি সিলেটের গোয়াইনঘাটে। প্রধান সড়কগুলো ডুবে যাওয়ায় উপজেলাটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ঝুঁকি নিয়ে পথ চলছে এলাকার লোকজন। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে সিলেট সদরসহ জেলার ছয়টি উপজেলা। তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টরের ধান। সরকারি-বেসরকারি অফিস, বাসাবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বাজার জলমগ্ন হয়েছে। কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাট উপজেলা সিলেট সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।কানাইঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সিলেট সদর উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়ক সিলেট-দরবস্ত-চতুল-কানাইঘাট সড়ক, কানাইঘাট-গাছবাড়ী গাজী বোরহান উদ্দিন সড়ক, কানাইঘাট-সুরইঘাট সড়ক ও কানাইঘাট-শাহবাগ-জকিগঞ্জ সড়ক তলিয়ে গেছে। বেশির ভাগ বাজার জলমগ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোর মালামাল। লক্ষ্মী প্রাসাদ পূর্ব, লক্ষ্মী প্রাসাদ পশ্চিম, দিঘিরপার পূর্ব, সাতবাক, সদর, বড় চতুল, দক্ষিণ বানিগ্রাম, ঝিংগাবাড়ী ও রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেশির ভাগ এলাকা বিদ্যুিবহীন হয়ে পড়েছে। মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। গ্রামীণ রাস্তাগুলোতে নৌকা চলাচল করছে। বোরো ধানের পাশাপাশি আউশের বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় কৃষক বিপাকে পড়েছেন। গত রবিবার কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়। লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের কুওরঘড়ি সুরমা ডাইকে (বাঁধ) ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলার শতাধিক মৎস্য খামার, ফিশারি ও পুকুর বন্যার পানির সঙ্গে মিশে মাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কানাইঘাটের পাত্রমাটি গ্রামের জামিল আহমদ জানান, তাঁদের ঘরে পানি ঢুকে গেছে। দুই শিশু, মা-বোন ও স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন ব্যানার্জি বলেন, বন্যাকবলিতদের জন্য ১৭টি আশ্রয়ণকেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া ১৯ মেট্রিক টন চাল ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নগুলোতে বণ্টন করা হয়েছে।সিলেট সদরের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম সড়ক সারি-গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পূর্ব জাফলং, মধ্য জাফলং, পূর্ব আলীরগাঁও, পশ্চিম আলীরগাঁও, পশ্চিম জাফলং, রুস্তুমপুর, ডৌবাড়ী, তোয়াকুল ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকাসহ উপজেলার সব কটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গ্রামীণ জনপদের বেশির ভাগ সড়ক তলিয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে কৃষকের পাঁচ শতাধিক হেক্টর জমির বোরো ধান ও ২১ হেক্টর আউশ ধানের বীজতলা। ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ছে। হাটবাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে।গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান বলেন, গতকাল বৃষ্টি না থাকলেও আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, আগামী কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হবে। বিষয়টি খুবই শঙ্কার। তবে ত্রাণ বিতরণ চলছে।জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায় টানা বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। উপজেলার বারহাল, মানিকপুর, কাজলসার ইউপিসহ বিভিন্ন এলাকায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে ও উপচে পড়া পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বন্ধ হয়ে গেছে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বীজতলা। তলিয়ে গেছে মাছ চাষের শতাধিক পুকুর ও ফিশারি। পৌরসভার জকিগঞ্জের প্রধান ডাকঘর, প্রাণিসম্পদ অফিস, স্থলশুল্ক স্টেশন, জকিগঞ্জ ফাজিল সিনিয়র মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ছয় ইউনিয়ন ইসলামপুর পশ্চিম, ইসলামপুর পূর্ব, তেলিখাল, ইছাকলস, উত্তর রনিখাইন ও দক্ষিণ রনিখাইনের বেশির ভাগ গ্রাম, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেছেন, বন্যায় ফসল, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। একই অবস্থা সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায়। জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট এবং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দি। এসব গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। ফসলি জমিও তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া সিলেট নগর ও সদর উপজেলার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ১২ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমরা ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে চাল বিতরণ শুরু করেছি। কৃষকদের ফসলের ক্ষতির পরিমাণ করা হচ্ছে। ’সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘আগামী ১৮ মে পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে রাতে বৃষ্টি বেশি হবে। ’জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেছেন, ‘বন্যা কবলিত পাঁচ উপজেলায় আমরা ৭৯ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য দিয়েছি প্রধানমন্ত্রীর মানবিক ত্রাণ তহবিল থেকে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উপজেলাগুলো পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে সে অনুযায়ী সহায়তা প্রদানের জন্য।
Jun 29, 2022 20 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jun 25, 2022 54 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jun 19, 2022 94 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jun 18, 2022 82 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jun 18, 2022 85 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jun 15, 2022 55 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jun 14, 2022 78 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jun 14, 2022 93 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jun 14, 2022 61 নবীগঞ্জের সংবাদ
May 24, 2022 119 নবীগঞ্জের সংবাদ
May 24, 2022 187 নবীগঞ্জের সংবাদ
May 20, 2022 159 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 29, 2022 225 নবীগঞ্জের সংবাদ
Aug 24, 2019 1799 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 14, 2020 1370 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 20, 2020 1058 নবীগঞ্জের সংবাদ
May 06, 2020 1154 নবীগঞ্জের সংবাদ
Sep 25, 2019 1268 সংবাদ
Apr 25, 2020 1209 মতামত
Apr 27, 2020 1149 নবীগঞ্জের সংবাদ
Sep 25, 2019 1362 নবীগঞ্জের সংবাদ
Oct 23, 2019 1193 নবীগঞ্জের সংবাদ